ঢাকা ০৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে: ঢাকার দুই সিটির ১৩টি ওয়ার্ড উচ্চ ঝুঁকিতে

ঢাকায় ডেঙ্গুর মৌসুম এখনও শুরু হয়নি, অথচ রাজধানীতে এডিস মশার বিস্তার ইতোমধ্যেই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক এক জরিপে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মোট ১৩টি ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি বিপজ্জনক হারে বেড়েছে।

জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত প্রাক-বর্ষা জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘মৌসুম পূর্ব এডিস সার্ভে ২০২৫’-এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে জরিপের এ চিত্র তুলে ধরা হয়।

এডিস মশার প্রজনন স্থলের ঘনত্ব পরিমাপ করতে ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই সূচকে যদি কোনও এলাকার ২০ শতাংশ পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া যায়, তবে সেটি ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর এবার জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা শহরের অন্তত ১৩টি ওয়ার্ডে এই সূচক ২০-এর ওপরে অবস্থান করছে, যা স্পষ্টভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

যেসব ওয়ার্ড বেশি ঝুঁকিতে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি):
ওয়ার্ড নম্বর: ২, ৮, ১২, ১৩, ২২ ও ৩৪

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি):
ওয়ার্ড নম্বর: ৩, ৪, ২৩, ৩১, ৪১, ৪৬ ও ৪৭

এইসব এলাকায় প্রতি ১০০টি পাত্রে অন্তত ২০টির বেশি জায়গায় লার্ভা পাওয়া গেছে, যা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার স্পষ্ট সতর্কবার্তা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এখনই ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো না হলে বর্ষার মৌসুমে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এডিস মশা সাধারণত জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে প্রজনন করে। তাই ডাবের খোসা, ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, এসির ট্রে, নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে জমে থাকা পানি- এসব জায়গাই হয়ে ওঠে মশার প্রজনন কেন্দ্র।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নাগরিকদের সতর্ক করা হচ্ছে- নিজ নিজ বাসাবাড়ি ও আশপাশের পরিবেশ পরিস্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে বর্ষার আগে যেকোনও স্থানে পানি জমে থাকলে তা দ্রুত অপসারণ করতে হবে। বাসাবাড়ির ছাদ, বারান্দা ও নিচতলা নিয়মিত পরিদর্শন করে সম্ভাব্য প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে।

ডেঙ্গু এখন শুধু মৌসুমভিত্তিক রোগ নয়, বরং সারা বছরই এর ঝুঁকি বিদ্যমান। তাই বর্ষা শুরুর আগেই সতর্কতা অবলম্বন, কার্যকর পরিকল্পনা ও সম্মিলিত জনসচেতনতাই পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধ করতে।

 

নতুুনকথা/এএস

 

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে: ঢাকার দুই সিটির ১৩টি ওয়ার্ড উচ্চ ঝুঁকিতে

আপডেট সময় ০৪:৪৩:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

ঢাকায় ডেঙ্গুর মৌসুম এখনও শুরু হয়নি, অথচ রাজধানীতে এডিস মশার বিস্তার ইতোমধ্যেই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক এক জরিপে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মোট ১৩টি ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি বিপজ্জনক হারে বেড়েছে।

জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত প্রাক-বর্ষা জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘মৌসুম পূর্ব এডিস সার্ভে ২০২৫’-এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে জরিপের এ চিত্র তুলে ধরা হয়।

এডিস মশার প্রজনন স্থলের ঘনত্ব পরিমাপ করতে ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই সূচকে যদি কোনও এলাকার ২০ শতাংশ পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া যায়, তবে সেটি ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর এবার জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা শহরের অন্তত ১৩টি ওয়ার্ডে এই সূচক ২০-এর ওপরে অবস্থান করছে, যা স্পষ্টভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

যেসব ওয়ার্ড বেশি ঝুঁকিতে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি):
ওয়ার্ড নম্বর: ২, ৮, ১২, ১৩, ২২ ও ৩৪

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি):
ওয়ার্ড নম্বর: ৩, ৪, ২৩, ৩১, ৪১, ৪৬ ও ৪৭

এইসব এলাকায় প্রতি ১০০টি পাত্রে অন্তত ২০টির বেশি জায়গায় লার্ভা পাওয়া গেছে, যা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার স্পষ্ট সতর্কবার্তা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় এখনই ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো না হলে বর্ষার মৌসুমে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এডিস মশা সাধারণত জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে প্রজনন করে। তাই ডাবের খোসা, ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, এসির ট্রে, নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে জমে থাকা পানি- এসব জায়গাই হয়ে ওঠে মশার প্রজনন কেন্দ্র।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নাগরিকদের সতর্ক করা হচ্ছে- নিজ নিজ বাসাবাড়ি ও আশপাশের পরিবেশ পরিস্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে বর্ষার আগে যেকোনও স্থানে পানি জমে থাকলে তা দ্রুত অপসারণ করতে হবে। বাসাবাড়ির ছাদ, বারান্দা ও নিচতলা নিয়মিত পরিদর্শন করে সম্ভাব্য প্রজননস্থল ধ্বংস করতে হবে।

ডেঙ্গু এখন শুধু মৌসুমভিত্তিক রোগ নয়, বরং সারা বছরই এর ঝুঁকি বিদ্যমান। তাই বর্ষা শুরুর আগেই সতর্কতা অবলম্বন, কার্যকর পরিকল্পনা ও সম্মিলিত জনসচেতনতাই পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধ করতে।

 

নতুুনকথা/এএস