ঢাকা ০৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাফনের কাপড়ে প্রতিবাদ : এনবিআরে আবারও কলম বিরতি

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:১৫:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

সংগৃহিত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভবনে আবারও জোরালো হলো প্রতিবাদের সুর। সোমবার (২৩ জুন) সকাল থেকে আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ে কলম রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে এবারের আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা—কাফনের কাপড় পরে তারা জানিয়ে দিলেন, দাবি আদায়ে তারা আপসহীন।

‘গোলামী আইন বাতিল কর’, ‘বদলির নামে প্রহসন চলবে না’, ‘চেয়ারম্যানের অপসারণ চাই’—এমন নানা স্লোগান লিখিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সজ্জিত হয়ে হাজির হন আন্দোলনকারীরা। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে তারা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

গতকাল রোববার (২২ জুন) উপকর কমিশনার পর্যায়ের পাঁচ কর্মকর্তাকে হঠাৎ বদলি করার আদেশকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। ঐক্য পরিষদের দাবি, আন্দোলন ভাঙতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আর এতে বদলির স্বাভাবিক প্রক্রিয়াও মানা হয়নি।

সরকারি নিয়মে বদলির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ কর্মদিবস সময় দেওয়ার কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

এনবিআরকে দুই ভাগে বিভক্ত করার সরকারি অধ্যাদেশ জারির পর থেকেই এই অসন্তোষ ক্রমেই ঘনীভূত হয়েছে। ১২ মে জারি হওয়া ওই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে ২৬ মে পর্যন্ত চলা প্রথম দফার আন্দোলনের পর অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত হচ্ছে না বরং ‘বিশেষায়িত ও স্বাধীন’ বিভাগ হিসেবে পুনর্গঠন করা হচ্ছে।

ঐ ঘোষণার পর কলম বিরতি সাময়িকভাবে স্থগিত হলেও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এবং তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

২০ জুন সরকার এনবিআর কাঠামোগত সংস্কারে ছয় সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে। তবে ঐ কমিটিতে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষুব্ধ ঐক্য পরিষদ।

সংগঠনটি বলছে, সরকার একদিকে সংস্কারের কথা বলছে, অন্যদিকে যারা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তাদের বাদ দিয়ে স্বাগতবক্তাদের দিয়ে কমিটি সাজিয়েছে—এটা নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন, এনবিআর চেয়ারম্যান নিজেই সংস্কার কার্যক্রমে প্রধান অন্তরায় হয়ে উঠেছেন। তাঁর বক্তব্য ও আচরণ ‘উসকানিমূলক’ এবং ‘সংস্কারবিরোধী’ বলেও দাবি তাদের।

তারা বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য যদি প্রকৃত সংস্কারই হয়, তাহলে তার শুরু হোক এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণের মধ্য দিয়ে।

এছাড়া তারা অভিযোগ করেন, এনবিআর চেয়ারম্যান চলমান আন্দোলনকে ভাঙতে বদলি ও দমননীতির আশ্রয় নিয়েছেন। ফেসবুক ও গণমাধ্যমে যেসব কর্মকর্তারা সরকারি অধ্যাদেশকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, তারাই নতুন গঠিত কমিটির অংশ হয়েছেন—এটাও আন্দোলনকারীদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

কাফনের কাপড়ে প্রতিবাদ : এনবিআরে আবারও কলম বিরতি

আপডেট সময় ১১:১৫:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভবনে আবারও জোরালো হলো প্রতিবাদের সুর। সোমবার (২৩ জুন) সকাল থেকে আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ে কলম রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে এবারের আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা—কাফনের কাপড় পরে তারা জানিয়ে দিলেন, দাবি আদায়ে তারা আপসহীন।

‘গোলামী আইন বাতিল কর’, ‘বদলির নামে প্রহসন চলবে না’, ‘চেয়ারম্যানের অপসারণ চাই’—এমন নানা স্লোগান লিখিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সজ্জিত হয়ে হাজির হন আন্দোলনকারীরা। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে তারা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

গতকাল রোববার (২২ জুন) উপকর কমিশনার পর্যায়ের পাঁচ কর্মকর্তাকে হঠাৎ বদলি করার আদেশকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। ঐক্য পরিষদের দাবি, আন্দোলন ভাঙতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আর এতে বদলির স্বাভাবিক প্রক্রিয়াও মানা হয়নি।

সরকারি নিয়মে বদলির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ কর্মদিবস সময় দেওয়ার কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

এনবিআরকে দুই ভাগে বিভক্ত করার সরকারি অধ্যাদেশ জারির পর থেকেই এই অসন্তোষ ক্রমেই ঘনীভূত হয়েছে। ১২ মে জারি হওয়া ওই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে ২৬ মে পর্যন্ত চলা প্রথম দফার আন্দোলনের পর অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এনবিআর বিলুপ্ত হচ্ছে না বরং ‘বিশেষায়িত ও স্বাধীন’ বিভাগ হিসেবে পুনর্গঠন করা হচ্ছে।

ঐ ঘোষণার পর কলম বিরতি সাময়িকভাবে স্থগিত হলেও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এবং তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

২০ জুন সরকার এনবিআর কাঠামোগত সংস্কারে ছয় সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে। তবে ঐ কমিটিতে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষুব্ধ ঐক্য পরিষদ।

সংগঠনটি বলছে, সরকার একদিকে সংস্কারের কথা বলছে, অন্যদিকে যারা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে তাদের বাদ দিয়ে স্বাগতবক্তাদের দিয়ে কমিটি সাজিয়েছে—এটা নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন, এনবিআর চেয়ারম্যান নিজেই সংস্কার কার্যক্রমে প্রধান অন্তরায় হয়ে উঠেছেন। তাঁর বক্তব্য ও আচরণ ‘উসকানিমূলক’ এবং ‘সংস্কারবিরোধী’ বলেও দাবি তাদের।

তারা বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য যদি প্রকৃত সংস্কারই হয়, তাহলে তার শুরু হোক এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণের মধ্য দিয়ে।

এছাড়া তারা অভিযোগ করেন, এনবিআর চেয়ারম্যান চলমান আন্দোলনকে ভাঙতে বদলি ও দমননীতির আশ্রয় নিয়েছেন। ফেসবুক ও গণমাধ্যমে যেসব কর্মকর্তারা সরকারি অধ্যাদেশকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, তারাই নতুন গঠিত কমিটির অংশ হয়েছেন—এটাও আন্দোলনকারীদের প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।