ঢাকা ০৯:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতিতে এখনো নিশ্চুপ খামেনি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তার বক্তব্যই চূড়ান্ত বিবেচিত হয়, তাই দেশ-বিদেশের দৃষ্টি এখন তাঁর প্রতিক্রিয়ার দিকে।

মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা যুদ্ধবিরতির কথা নিশ্চিত করেন। তবে খামেনির দিক থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। বরং, তাঁকে নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে যে তিনি রাজধানী তেহরানের নিজের বাসভবনে না থেকে কোনো নিরাপদ বাঙ্কারে অবস্থান করছেন। যদিও বিষয়টি সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।

সর্বশেষ গত ১৮ জুন খামেনির একটি পূর্বে ধারণকৃত ভিডিও বার্তা প্রচারিত হয়, যেখানে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের’ আহ্বান সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে জানান, ইসরায়েল ও ইরান সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তার ভাষায়, “যুদ্ধবিরতি এখন কার্যকর। দয়া করে কেউ এটি লঙ্ঘন করবেন না।”

তবে তার এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই কাতার ও ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। পরে আবারও হামলা-পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ইসরায়েল এক হামলায় ইরানের একজন পরমাণু বিজ্ঞানী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে। এর জবাবে ইরান ইসরায়েলের প্রযুক্তিনগরী বিরশেবাতে হামলা চালায়, যাতে চারজন নিহত হন।

পরিস্থিতি স্বস্তির দিকে যাচ্ছে- এমন প্রত্যাশার মাঝেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক বিবৃতিতে জানান, “সামরিক অভিযান বন্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। তবে যদি ইসরায়েল ইরানি জনগণের ওপর তাদের অবৈধ আগ্রাসন বন্ধ রাখে, তাহলে আমরা পাল্টা হামলার প্রয়োজন অনুভব করব না।” প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানও একই বক্তব্য দেন।

এরই মাঝে ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে হেগ যাওয়ার পথে আবারও এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সম্মানের বিষয় ছিল। তবুও আমি বলছি- যুদ্ধ বন্ধ করুন।” একই পোস্টে তিনি দাবি করেন, “ইসরায়েল ও ইরান উভয়ই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চেয়েছিল।”

ট্রাম্পের ঘোষণা ও ইরান-ইসরায়েলের শীর্ষ পর্যায়ের বক্তব্যের পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও, পুরোপুরি আস্থায় ভর করে কেউ কথা বলছে না। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল একাধিকবার তা লঙ্ঘন করেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খামেনির নীরবতা কৌশলগত হতে পারে। অথবা তিনি যুদ্ধবিরতির বিষয়টি পর্যালোচনার সময় নিচ্ছেন। কারণ, তার চূড়ান্ত বক্তব্য ছাড়া ইরানের বাস্তব নীতিগত অবস্থান পরিপূর্ণভাবে বোঝা যায় না।

 

নতুনকথা/এএস

 

বিএনপি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রিত্বের পক্ষে

যুদ্ধবিরতিতে এখনো নিশ্চুপ খামেনি

আপডেট সময় ০৫:৪৯:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তার বক্তব্যই চূড়ান্ত বিবেচিত হয়, তাই দেশ-বিদেশের দৃষ্টি এখন তাঁর প্রতিক্রিয়ার দিকে।

মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা যুদ্ধবিরতির কথা নিশ্চিত করেন। তবে খামেনির দিক থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। বরং, তাঁকে নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে যে তিনি রাজধানী তেহরানের নিজের বাসভবনে না থেকে কোনো নিরাপদ বাঙ্কারে অবস্থান করছেন। যদিও বিষয়টি সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।

সর্বশেষ গত ১৮ জুন খামেনির একটি পূর্বে ধারণকৃত ভিডিও বার্তা প্রচারিত হয়, যেখানে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের’ আহ্বান সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে জানান, ইসরায়েল ও ইরান সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তার ভাষায়, “যুদ্ধবিরতি এখন কার্যকর। দয়া করে কেউ এটি লঙ্ঘন করবেন না।”

তবে তার এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই কাতার ও ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। পরে আবারও হামলা-পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ইসরায়েল এক হামলায় ইরানের একজন পরমাণু বিজ্ঞানী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে। এর জবাবে ইরান ইসরায়েলের প্রযুক্তিনগরী বিরশেবাতে হামলা চালায়, যাতে চারজন নিহত হন।

পরিস্থিতি স্বস্তির দিকে যাচ্ছে- এমন প্রত্যাশার মাঝেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক বিবৃতিতে জানান, “সামরিক অভিযান বন্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। তবে যদি ইসরায়েল ইরানি জনগণের ওপর তাদের অবৈধ আগ্রাসন বন্ধ রাখে, তাহলে আমরা পাল্টা হামলার প্রয়োজন অনুভব করব না।” প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানও একই বক্তব্য দেন।

এরই মাঝে ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে হেগ যাওয়ার পথে আবারও এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সম্মানের বিষয় ছিল। তবুও আমি বলছি- যুদ্ধ বন্ধ করুন।” একই পোস্টে তিনি দাবি করেন, “ইসরায়েল ও ইরান উভয়ই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চেয়েছিল।”

ট্রাম্পের ঘোষণা ও ইরান-ইসরায়েলের শীর্ষ পর্যায়ের বক্তব্যের পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও, পুরোপুরি আস্থায় ভর করে কেউ কথা বলছে না। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল একাধিকবার তা লঙ্ঘন করেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খামেনির নীরবতা কৌশলগত হতে পারে। অথবা তিনি যুদ্ধবিরতির বিষয়টি পর্যালোচনার সময় নিচ্ছেন। কারণ, তার চূড়ান্ত বক্তব্য ছাড়া ইরানের বাস্তব নীতিগত অবস্থান পরিপূর্ণভাবে বোঝা যায় না।

 

নতুনকথা/এএস