কোরবানির ঈদের আগে ও পরে মাত্র পাঁচ দিনে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা নিয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি, আর কোরবানির পশু জবাই করতে গিয়ে আহত হয়েছেন ১৩৮ জন।
পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের হলঘরগুলো এখন রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড়ে ঠাসা। দীর্ঘ লাইন, অপেক্ষার ক্লান্তি আর হতাশার ছাপ চোখে পড়ে সবাইর মুখে। অনেকের হাতে ও পায়ে গুরুতর চোট, এমনকি এমন কেউ আছেন যাদের সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফরিদপুর থেকে আসা আরমান হোসেনের বাবা আশিক হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ঈদের আগের রাতে ছেলেকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আঘাত লেগেছে। এক হাত পুরোপুরি ভেঙে গেছে। ঈদ আমাদের পরিবারের কাছে সুখবর নয়, হাসপাতালেই কাটালাম।
অন্যদিকে, কিশোরগঞ্জের ইসলাম উদ্দিন জানান, “জরুরি বিভাগে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও শয্যা পাচ্ছি না। কিন্তু আর কোনো জায়গা নেই।
পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কেনান বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির সময় দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। তাই রোগীর চাপ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।
পাঁচ দিনের এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে ১,৫২০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন, যার মধ্যে ভর্তি হয়েছেন ৪২২ জন এবং অস্ত্রোপচার করেছেন ৪৬৬ জন। শুধুমাত্র গত ঈদের দিনে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩২৫ জন, ভর্তি হয়েছেন ১২২ জন এবং অস্ত্রোপচার হয়েছে ১০২ জনের।
চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে কোরবানির পশু জবাইয়ের দুর্ঘটনা মিলিয়ে এই সময়ে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থা অতিরিক্ত চাপের মধ্যে পড়েছে। সবাইকে বিশেষ করে কোরবানির সময় বেশি সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
নতুনকথা/এএস