ঢাকা ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাক সেনাপ্রধানের সাক্ষাতের আগে ট্রাম্প-মোদির টেলিফোনালাপ, আলোচনায় ‘অপারেশন সিন্দুর’

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার অনুষ্ঠিত এ ফোনালাপে মূলত আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ভারত পরিচালিত ‘অপারেশন সিন্দুর’।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী এক ভিডিও বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মোদি-ট্রাম্প বৈঠকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েও সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। তবে প্রায় ৩৫ মিনিটের দীর্ঘ ফোনালাপের বড় অংশজুড়ে ছিল কাশ্মীর সীমান্তে ভারতের সামরিক অভিযানের বিষয়টি।

বিক্রম মিশ্রী বলেন, গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরপর এটি ছিল দুই নেতার প্রথম সরাসরি যোগাযোগ। এসময় প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পেছনের কৌশল ও যৌক্তিকতা ট্রাম্পকে ব্যাখ্যা করেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি ট্রাম্পকে জানান, ২২ এপ্রিলের হামলার পর ভারত দৃঢ়ভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং ৬-৭ মে রাতে চালানো সামরিক অভিযানে শুধু জঙ্গি ঘাঁটি ও গোপন আস্তানাকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ভারত নিশ্চিত করেছে যেন উত্তেজনা বৃদ্ধি না পায়। প্রয়োজনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দেওয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, ৯ মে রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক ভান্স মোদিকে ফোন করে সতর্ক করেন যে পাকিস্তান বড় ধরনের সামরিক হামলা চালাতে পারে। তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্টভাবে জানান, ভারতের ওপর যেকোনো আগ্রাসনের কঠিন জবাব দেওয়া হবে।

ভারত সেই অনুযায়ী ৯-১০ মে রাতে পাল্টা হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটি ও বিমানঘাঁটিতে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়। এতে পাকিস্তান সামরিক অভিযান বন্ধের অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয় বলে দাবি করেন পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি আরও জানান, এই আলোচনায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি বা পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার কোনো বিষয় আসেনি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুধু মোদির বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

জি-৭ সম্মেলনের সময় দুই নেতার মুখোমুখি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্প সময়ের অভাবে আগেভাগেই সম্মেলন ত্যাগ করায় সেটি সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ট্রাম্পের আগ্রহেই বুধবার সকালে ভারতীয় সময় এই টেলিফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র: বিবিসি

 

নতুন কথা/এএস

ট্যাগস :

পাক সেনাপ্রধানের সাক্ষাতের আগে ট্রাম্প-মোদির টেলিফোনালাপ, আলোচনায় ‘অপারেশন সিন্দুর’

আপডেট সময় ০৩:৩২:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার অনুষ্ঠিত এ ফোনালাপে মূলত আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ভারত পরিচালিত ‘অপারেশন সিন্দুর’।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী এক ভিডিও বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মোদি-ট্রাম্প বৈঠকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েও সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। তবে প্রায় ৩৫ মিনিটের দীর্ঘ ফোনালাপের বড় অংশজুড়ে ছিল কাশ্মীর সীমান্তে ভারতের সামরিক অভিযানের বিষয়টি।

বিক্রম মিশ্রী বলেন, গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরপর এটি ছিল দুই নেতার প্রথম সরাসরি যোগাযোগ। এসময় প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পেছনের কৌশল ও যৌক্তিকতা ট্রাম্পকে ব্যাখ্যা করেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি ট্রাম্পকে জানান, ২২ এপ্রিলের হামলার পর ভারত দৃঢ়ভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং ৬-৭ মে রাতে চালানো সামরিক অভিযানে শুধু জঙ্গি ঘাঁটি ও গোপন আস্তানাকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ভারত নিশ্চিত করেছে যেন উত্তেজনা বৃদ্ধি না পায়। প্রয়োজনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দেওয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, ৯ মে রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক ভান্স মোদিকে ফোন করে সতর্ক করেন যে পাকিস্তান বড় ধরনের সামরিক হামলা চালাতে পারে। তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্টভাবে জানান, ভারতের ওপর যেকোনো আগ্রাসনের কঠিন জবাব দেওয়া হবে।

ভারত সেই অনুযায়ী ৯-১০ মে রাতে পাল্টা হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটি ও বিমানঘাঁটিতে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়। এতে পাকিস্তান সামরিক অভিযান বন্ধের অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয় বলে দাবি করেন পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি আরও জানান, এই আলোচনায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি বা পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার কোনো বিষয় আসেনি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুধু মোদির বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

জি-৭ সম্মেলনের সময় দুই নেতার মুখোমুখি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ট্রাম্প সময়ের অভাবে আগেভাগেই সম্মেলন ত্যাগ করায় সেটি সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ট্রাম্পের আগ্রহেই বুধবার সকালে ভারতীয় সময় এই টেলিফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র: বিবিসি

 

নতুন কথা/এএস