ঢাকা ০৪:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সহিংসতা ও যুদ্ধ অনিবার্য নয়।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:৪৫:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

পতাকা

“অনিবার্য” শব্দের অর্থ হলো, যা এড়ানো যায় না, যে ঘটনা ঠেকানো অসম্ভব। মৃত্যুকে বলা হয় “অনিবার্য”, কারণ তা প্রতিটি জীবিত সত্তার জন্য অবশ্যম্ভাবী। সূর্য ওঠা বা সময়ের গতি, এগুলোও অনিবার্য প্রাকৃতিক নিয়ম।
সহিংসতা ও যুদ্ধ মানুষ সৃষ্টি করে, প্রকৃতি নয়। যুদ্ধ ও সহিংসতা মানুষের চিন্তা, সিদ্ধান্ত, স্বার্থ ও রাজনীতির ফল। এটি প্রাকৃতিক কোনো আইন বা জৈবিক বাধ্যতা নয়। অতএব, মানুষ যদি চায়, সহিংসতা ও যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব। শান্তিপূর্ণ উপায়ে দ্বন্দ্ব মীমাংসা সম্ভব।
যেমন, ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ প্রায় নিশ্চিত ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা এড়ানো হয় কুটনৈতিক উপায়ে, আলোচনার মাধ্যমে। যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
কেন যুদ্ধ? কার প্রয়োজনে?
মার্ক্সবাদীরা যুদ্ধকে দেখে শ্রেণীদৃষ্টিভঙ্গি থেকে। যুদ্ধ শ্রেণীস্বার্থে পরিচালিত একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার।
মার্ক্সবাদীদের কাছে যুদ্ধের কারণ খুব স্পষ্ট। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় উৎপাদন হয় লাভের জন্য, মানুষের প্রয়োজন মেটানোর জন্য নয়। অতিরিক্ত পুঁজি ও পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য দরকার হয় নতুন বাজার, কাঁচামাল ও শ্রমশক্তির। এই কারণে শুরু হয় নতুন বাজার দখল ও নিয়ন্ত্রণের লড়াই। দেশ দখলের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা থেকে আন্তর্জাতিক পুঁজিবাদী শক্তিগুলোর মধ্যেকার দ্বন্দ্ব থেকে জন্ম নেয় যুদ্ধ, যখন তারা আলোচনা করে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে ব্যার্থ হয়। পুঁজিবাদ যখন চূড়ান্ত বিকশিত, তখন সেটি নয়া উপনিবেশিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে।
যতক্ষণ পুঁজিবাদ থাকবে, ততক্ষণ যুদ্ধের সম্ভাবনা থাকবে। যুদ্ধ মানব সমাজের চিরন্তন ও প্রাকৃতিক অনিবার্যতা নয়। ফলে যুদ্ধ বন্ধ করা যাবে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে একটি শ্রেণিহীন, সমাজতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে। পুঁজিবাদ না থাকলে যুদ্ধের কাঠামোগত প্রয়োজন আর থাকবে না।
যুদ্ধ অনিবার্য নয়, বরং এটি নির্দিষ্ট শোষণমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ফল।
যদি পুঁজিবাদী শোষণ, প্রতিযোগিতা ও সাম্রাজ্যবাদ দূর করা যায়, তাহলে যুদ্ধ ও সহিংসতা থাকবেনা। মানুষ এর নতুন সভ্যতায় প্রবেশ করবে।
সাম্য ও শান্তি আসবে তখনই, যখন দুনিয়ার দেশে দেশে শ্রমিকশ্রেণী জাতীয় এবং বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদী শোষণের ব্যাবস্থা বদলে দেবে।
আজিজুর রহমান আসাদ।

সহিংসতা ও যুদ্ধ অনিবার্য নয়।

আপডেট সময় ০৭:৪৫:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
“অনিবার্য” শব্দের অর্থ হলো, যা এড়ানো যায় না, যে ঘটনা ঠেকানো অসম্ভব। মৃত্যুকে বলা হয় “অনিবার্য”, কারণ তা প্রতিটি জীবিত সত্তার জন্য অবশ্যম্ভাবী। সূর্য ওঠা বা সময়ের গতি, এগুলোও অনিবার্য প্রাকৃতিক নিয়ম।
সহিংসতা ও যুদ্ধ মানুষ সৃষ্টি করে, প্রকৃতি নয়। যুদ্ধ ও সহিংসতা মানুষের চিন্তা, সিদ্ধান্ত, স্বার্থ ও রাজনীতির ফল। এটি প্রাকৃতিক কোনো আইন বা জৈবিক বাধ্যতা নয়। অতএব, মানুষ যদি চায়, সহিংসতা ও যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব। শান্তিপূর্ণ উপায়ে দ্বন্দ্ব মীমাংসা সম্ভব।
যেমন, ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ প্রায় নিশ্চিত ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা এড়ানো হয় কুটনৈতিক উপায়ে, আলোচনার মাধ্যমে। যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
কেন যুদ্ধ? কার প্রয়োজনে?
মার্ক্সবাদীরা যুদ্ধকে দেখে শ্রেণীদৃষ্টিভঙ্গি থেকে। যুদ্ধ শ্রেণীস্বার্থে পরিচালিত একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার।
মার্ক্সবাদীদের কাছে যুদ্ধের কারণ খুব স্পষ্ট। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় উৎপাদন হয় লাভের জন্য, মানুষের প্রয়োজন মেটানোর জন্য নয়। অতিরিক্ত পুঁজি ও পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য দরকার হয় নতুন বাজার, কাঁচামাল ও শ্রমশক্তির। এই কারণে শুরু হয় নতুন বাজার দখল ও নিয়ন্ত্রণের লড়াই। দেশ দখলের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা থেকে আন্তর্জাতিক পুঁজিবাদী শক্তিগুলোর মধ্যেকার দ্বন্দ্ব থেকে জন্ম নেয় যুদ্ধ, যখন তারা আলোচনা করে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে ব্যার্থ হয়। পুঁজিবাদ যখন চূড়ান্ত বিকশিত, তখন সেটি নয়া উপনিবেশিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে।
যতক্ষণ পুঁজিবাদ থাকবে, ততক্ষণ যুদ্ধের সম্ভাবনা থাকবে। যুদ্ধ মানব সমাজের চিরন্তন ও প্রাকৃতিক অনিবার্যতা নয়। ফলে যুদ্ধ বন্ধ করা যাবে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে একটি শ্রেণিহীন, সমাজতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে। পুঁজিবাদ না থাকলে যুদ্ধের কাঠামোগত প্রয়োজন আর থাকবে না।
যুদ্ধ অনিবার্য নয়, বরং এটি নির্দিষ্ট শোষণমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ফল।
যদি পুঁজিবাদী শোষণ, প্রতিযোগিতা ও সাম্রাজ্যবাদ দূর করা যায়, তাহলে যুদ্ধ ও সহিংসতা থাকবেনা। মানুষ এর নতুন সভ্যতায় প্রবেশ করবে।
সাম্য ও শান্তি আসবে তখনই, যখন দুনিয়ার দেশে দেশে শ্রমিকশ্রেণী জাতীয় এবং বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদী শোষণের ব্যাবস্থা বদলে দেবে।
আজিজুর রহমান আসাদ।