বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “আমরা এমন একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য সংগ্রাম করছি, যা জাতীয় অভিভাবক হিসেবে কাজ করবে এবং সংসদ ও নির্বাহী বিভাগের রক্ষাকবচ হবে।”
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দিনব্যাপী চলা রাজনৈতিক সংলাপ শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “আমরা চাই একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধানে রাষ্ট্রপতির প্রধান বিচারপতি নিয়োগের যে ক্ষমতা রয়েছে, সেটি যেন স্বেচ্ছাচারিতায় পরিণত না হয়, সে জন্য আমরা নির্দিষ্ট যোগ্যতা নির্ধারণের পক্ষে মত দিয়েছি। রাষ্ট্রপতি কী কী যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।”
সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, দুইটি রাজনৈতিক দল ব্যতীত প্রায় সবাই এ প্রস্তাবে একমত হয়েছে। তাঁর মতে, “নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে কারও দ্বিমত নেই। আমরা চাই, যেন আর কখনও রাজনৈতিক প্রভাবে বিচারপতি নিয়োগের মতো গুরুতর প্রক্রিয়া কলুষিত না হয়- যেমনটি অতীতে হয়েছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের শাসনামলে।”
সংলাপে আলোচিত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা বৃদ্ধি। বিএনপি ও বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল প্রস্তাব দিয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হোক।
সালাহউদ্দিন বলেন, “বর্তমান সংবিধানে যেভাবে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন হয়, সেই একই কাঠামোতে সংখ্যাবৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে সরাসরি ভোটে এই আসনগুলোতে প্রতিনিধি নির্বাচনের কথাও বলা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত হবে।”
তিনি আরও জানান, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ১০০ আসনবিশিষ্ট একটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের ধারণার সঙ্গে একমত হয়েছে। যদিও কিছু দলে ভিন্নমত রয়েছে, তবে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সংলাপের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এখনও বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “কিছু বিষয়ে এখনো আলোচনা বাকি আছে। তবে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, সেগুলো ‘জুলাই সনদ’-এ স্থান পাবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ধাপে ধাপে সামনে এগোচ্ছি। বিচার বিভাগ ও সংসদ কাঠামোর মতো মৌলিক বিষয়গুলোতে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। এতে করে ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য রাষ্ট্র কাঠামো নির্মাণ সম্ভব হবে।”
নতুুনকথা/এএস