রাজধানীর বিজয় সরণিতে অবস্থিত ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ২৭জুন শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে এই ভাঙার কাজ শুরু হয়। সেখানে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ‘মৃত্যুঞ্জয়’ আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছিল, এবার ভাঙা হলো বাঙালির বিভিন্ন সংগ্রামী অধ্যায়ের সাতটি ম্যুরালসহ দেয়াল।
১০ নভেম্বর ২০২৩, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চত্বরটির উদ্বোধন করেছিলেন। ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ ছিল একটি প্রতীকী স্থাপনা, যেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সঙ্গে যুক্ত ছিল ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ নানা ঐতিহাসিক মুহূর্তের চিত্রায়ণ।
ডিএনসিসি জানিয়েছে, ওই স্থানে নির্মাণ করা হবে একটি নতুন স্মারক গণমিনার। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহিদদের স্মরণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিএনসিসির সপ্তম কর্পোরেশন সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
‘গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি’র সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খোরশেদ আলম বলেন,আমাদের পরিকল্পনায় পুরো বিজয় সরণিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি কয়েকটি ধাপে বাস্তবায়ন হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে এই গণমিনার নির্মাণের কাজ ৫ আগস্টের মধ্যেই দৃশ্যমান রূপ পাবে।
কমিটির আরেক সদস্য, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন,২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণপ্রতিরোধ ও গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হয়েছেন ১,৪০০ জন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ। তাদের স্মরণেই এই স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন বলেন, আমরা একটি কনসেপ্ট তৈরি করেছি। আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে এর পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা জানানো হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি শুধুই স্থাপনা পরিবর্তন নয়, বরং ইতিহাস ও স্মৃতি রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ। ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ ভেঙে ফেলে ‘গণমিনার’ নির্মাণ বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন।