ঢাকা ০৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে কড়া বিবৃতি বার্নি স্যান্ডার্সের

ফাইল ফুটেজ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স গতকাল ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে কড়া বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমেরিকান জনগণকে ভিয়েতনাম ও ইরাক যুদ্ধের সময় যেমন মিথ্যা বলা হয়েছিল, আজ আবার তেমনই মিথ্যার মাধ্যমে আরেকটি যুদ্ধের ভিত্তি তৈরি করা হচ্ছে। তাঁর এই বক্তব্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই গভীর তাৎপর্যপূর্ণ।

 

সিনেটর স্যান্ডার্সের মতে, ১৯৬০-এর দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সরকার ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে যুদ্ধ সমর্থনে প্ররোচিত করেছিল। সেই যুদ্ধে ৫৮ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা প্রাণ হারান। আহত হন বহু মানুষ। লক্ষ লক্ষ ভিয়েতনামী নাগরিক নিহত হন, ধ্বংস হয় দেশের অবকাঠামো, এবং অপচয় হয় শত শত বিলিয়ন ডলার করদাতার অর্থ। যুদ্ধের পর দেখা যায়, সেই “কমিউনিস্ট হুমকি” বা “ডমিনো থিওরি”-র কোনো বাস্তব ভিত্তি ছিল না।

 

তেমনি, ২০০২ সালে ইরাক যুদ্ধের আগে বলা হয়েছিল ইরাকের হাতে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে, যা দ্রুত ধ্বংস না করলে মার্কিন ভূখণ্ড ঝুঁকিতে পড়বে। ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে এই দাবিকে সমর্থন করে বলেন, সাদ্দাম হোসেনকে সরাতে পারলে পুরো অঞ্চলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু যুদ্ধের পর প্রমাণ মেলে ইরাকের কাছে তেমন কোনো অস্ত্র ছিল না। এই মিথ্যার ভিত্তিতে শুরু হওয়া যুদ্ধে নিহত হন ৪ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা, আহত হন হাজার হাজার, এবং নিহত হন পাঁচ লক্ষাধিক ইরাকি নাগরিক।

 

বার্নি স্যান্ডার্স আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আজ আবার এমন একটি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে, এবার ইরানকে কেন্দ্র করে। তিনি বলেন, আমেরিকান জনগণকে আবারও বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দিতে পারি না।

 

সিনেটর স্যান্ডার্সের বক্তব্যে আজকের সময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে। যখন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জলবায়ু সংকটের মতো বড় বড় সমস্যায় জর্জরিত, তখন একটি নতুন যুদ্ধ পরিস্থিতি কেবল ধ্বংস ডেকে আনবে। যুদ্ধ মানে মৃত্যু, শরণার্থী, ধ্বংস, ঘৃণা এবং দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক অস্থিরতা।

 

এই প্রসঙ্গে বার্নি স্যান্ডার্সের সরল অথচ স্পষ্ট সতর্কবাণী গভীরভাবে ভাববার দাবি রাখে আমরা যেন আরেকটি মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের ফাঁদে পা না দিই। যুদ্ধ নয়, আমেরিকা ও বিশ্বকে এখন দরকার শান্তি, সততা ও মানুষের জীবন রক্ষার অঙ্গীকার।

ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে কড়া বিবৃতি বার্নি স্যান্ডার্সের

আপডেট সময় ০৭:৪৬:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স গতকাল ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে কড়া বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমেরিকান জনগণকে ভিয়েতনাম ও ইরাক যুদ্ধের সময় যেমন মিথ্যা বলা হয়েছিল, আজ আবার তেমনই মিথ্যার মাধ্যমে আরেকটি যুদ্ধের ভিত্তি তৈরি করা হচ্ছে। তাঁর এই বক্তব্য শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই গভীর তাৎপর্যপূর্ণ।

 

সিনেটর স্যান্ডার্সের মতে, ১৯৬০-এর দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সরকার ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে যুদ্ধ সমর্থনে প্ররোচিত করেছিল। সেই যুদ্ধে ৫৮ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা প্রাণ হারান। আহত হন বহু মানুষ। লক্ষ লক্ষ ভিয়েতনামী নাগরিক নিহত হন, ধ্বংস হয় দেশের অবকাঠামো, এবং অপচয় হয় শত শত বিলিয়ন ডলার করদাতার অর্থ। যুদ্ধের পর দেখা যায়, সেই “কমিউনিস্ট হুমকি” বা “ডমিনো থিওরি”-র কোনো বাস্তব ভিত্তি ছিল না।

 

তেমনি, ২০০২ সালে ইরাক যুদ্ধের আগে বলা হয়েছিল ইরাকের হাতে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে, যা দ্রুত ধ্বংস না করলে মার্কিন ভূখণ্ড ঝুঁকিতে পড়বে। ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে এই দাবিকে সমর্থন করে বলেন, সাদ্দাম হোসেনকে সরাতে পারলে পুরো অঞ্চলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু যুদ্ধের পর প্রমাণ মেলে ইরাকের কাছে তেমন কোনো অস্ত্র ছিল না। এই মিথ্যার ভিত্তিতে শুরু হওয়া যুদ্ধে নিহত হন ৪ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা, আহত হন হাজার হাজার, এবং নিহত হন পাঁচ লক্ষাধিক ইরাকি নাগরিক।

 

বার্নি স্যান্ডার্স আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আজ আবার এমন একটি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে, এবার ইরানকে কেন্দ্র করে। তিনি বলেন, আমেরিকান জনগণকে আবারও বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে দিতে পারি না।

 

সিনেটর স্যান্ডার্সের বক্তব্যে আজকের সময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে। যখন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জলবায়ু সংকটের মতো বড় বড় সমস্যায় জর্জরিত, তখন একটি নতুন যুদ্ধ পরিস্থিতি কেবল ধ্বংস ডেকে আনবে। যুদ্ধ মানে মৃত্যু, শরণার্থী, ধ্বংস, ঘৃণা এবং দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক অস্থিরতা।

 

এই প্রসঙ্গে বার্নি স্যান্ডার্সের সরল অথচ স্পষ্ট সতর্কবাণী গভীরভাবে ভাববার দাবি রাখে আমরা যেন আরেকটি মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের ফাঁদে পা না দিই। যুদ্ধ নয়, আমেরিকা ও বিশ্বকে এখন দরকার শান্তি, সততা ও মানুষের জীবন রক্ষার অঙ্গীকার।