কমরেড মুকুল সেন। এই নামটির সঙ্গে জড়িত বরিশালের কমিউনিস্ট পার্টির সৃষ্টি, বিকাশ ও আন্দোলনের ইতিহাস। পাকিস্তানের শোষণ নিপীড়ণ থেকে মুক্তিলাভের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাসের অন্যতম নক্ষত্র ছিলেন তিনি। সেই অগ্নিযুগে দেশমাতাকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের হাত থেকে স্বাধীন করার জন্য যে সকল মুক্তিপাগল বিপ্লবীরা জীবন-মৃত্যুকে পরোয়া না করে সশস্ত্র লড়াই-সংগামে সামিল হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে মুকুল সেন অন্যতম। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ছোট্ট গ্রাম গৈলায় ১৯০৮ সালে মুকুল সেন জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের মাত্র ছয় মাস পরেই সরকারি চাকুরির কারণে তাঁর বাবা ও জ্যাঠামশাইয়ের সাথে চলে আসেন বরিশাল শহরের রাজাবাহাদুরের হাভেলীতে। তাঁর শৈশব, বাল্য ও কিশোরকাল কেটেছে সেখানকার শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশে।
মুকুল সেনের জ্যাঠামশাই নিরঞ্জন সেনগুপ্ত ছিলেন ব্রাহ্মণ। এ বাড়িতে আসত ‘ব্রহ্মাবোধি’ পত্রিকা। সেই কৈশোরেই মুকুল সেন পরাধীনতায় যে অবমাননা ও আত্মগ্লানি আছে তা এই পত্রিকা পড়েই প্রথম উপলব্ধি করেন। সেসময় বিবেকানন্দের বই পড়ে তাঁর সামনে উন্মোচিত হয় জীবনের এক নতুন আলোকধারা। মুষ্টিভিক্ষা ও নরনরাছু সেবার মধ্য দিয়েই তার সমাজসেবার ক্ষেত্র সূচিত হয়। গ্রামের বৈরাগীদের কণ্ঠে ক্ষুদিরামের স্মারক গান “একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি” এবং মুকুন্দ দাশের স্বদেশ মুক্তির গান মুকুল সেনকে টেনে এনেছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বাংলার স্বদেশি আন্দোলনের স্রোতে।
শেরে বাংলার বক্তৃতায় জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের বিবরণ ও ব্রিটিশদের অন্যান্য ঘৃন্য কার্যকলাপ কিশোর মুকুল সেনের মনে গভীর ছাপ ফেলে। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের কাছে দেশসেবার কথা, জনগণের জন্য কাজ করার ও নিরক্ষরকে শিক্ষিত করার বাণী তাকে নতুন ধারণায় উজ্জীবিত করে। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে বরিশালে মদের দোকানে পিকেটিং, বিলাতি কাপড় পোড়ানো, বিদেশি দ্রব্য বর্জনের অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচিতে মুকুল সেন সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তাঁর বাবা ও জ্যাঠামশাই সরকারি চাকুরিজীবী হওয়ায় ভয় পেয়ে তাঁকে মামাবাড়ি পাঠিয়ে দেন।
মামাবাড়ির আবহাওয়া ছিল পুরোপুরি স্বদেশি। যা মুকুল সেনের স্বদেশ প্রেমের অনুশীলনের জন্য শাপেবর হয়ে ওঠে। বরিশাল টেকনিক্যাল স্কুলের তখনকার শিক্ষক শৈলেন দাস গুপ্তের প্রতিষ্ঠিত “তরুণ সংঘ” পাঠাগারে বিপ্লবী ও সাম্যবাদী পত্রিকা পড়ার নেশায় মুকুল সেনকে পেয়ে বসে। তখন নরেন সেন নামে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী এক বিপ্লবীর সাথে তাঁর পরিচয় হয়। তখনই রুশ বিপ্লব, মে দিবস, নভেম্বর বিপ্লব নিয়ে বিস্তারিত জানার সুযোগ পান তিনি। মুকুল সেন যুগান্তরের বিপ্লবী সদস্য গোপীনাথ সাহার সংস্পর্শে আসেন ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে। যিনি টেগার্ট সাহেবকে গুলি করতে গিয়ে ভুলক্রমে অন্য এক সাহেবকে গুলি করেন। ফলে বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। ১৯২৫ সালে মুকুল সেন অনন্ত চক্রবর্তী ও ভোলানাথ বাবুর কাছ থেকে বোমা তৈরীর ফর্মুলা শেখেন।
১৯২৬ সালে মুকুল সেনের নেতৃত্বে পটুয়াখালীতে সরকারের ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন বিজয়ী হয়। এ বছরই মুকুল সেন ও যুগান্তর দলের নেতারা বরিশালের কয়লাঘাটায় ‘সবুজ সম্মিলনী’ নামে একটি ক্লাব গঠন করে সেখানে নিয়মিত রাজনৈতিক আলোচনা ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন এবং হাতে লেখা নিয়মিত পোস্টার বের করতেন। ১৯২৭ সালে ভারতে ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসে ত্রিশ হাজার শ্রমিকের উপস্থিতিতে “দুনিয়ার মজদুর এক হও” স্লোগান এবং সমাজ বিপ্লবের নেতৃত্ব শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে সম্পন্ন না হলে বিপ্লব সফল হবে না, কংগ্রেসের এমন বক্তব্য মুকুল সেনকে শোষণ মুক্তির উপায় কোন পথে, তা ভাবতে শেখায়।
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষে কংগ্রেসের খাজনা বন্ধ আন্দোলনে সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘এড় ইধপশ, ঝরসড়হ’ ধ্বনিতে সমগ্র ভারত মুখরিত। ব্রিটিশ পুলিশ স্যান্ডার্স হত্যা মামলায় ভগৎ সিং রাজগুরু ও সুখদেবের ফাঁসি এবং রাজবন্দিদের মর্যাদা দানের দাবিতে ৬৩ দিন অনশনের ফলে বিপ্লবী যতীন দাসের আত্মোৎসর্গ বাংলার বিপ্লবীদের এক নতুন উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত করে, যে আন্দোলনে বরিশালের অন্যতম সংগঠক ছিলেন মুকুল সেন।
১৯২৬ সালের ১৬ মে পার্টির অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাজশাহী শহরে ডাকের টাকা লুটের ঘটনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন মুকুল সেন। এতে মামলায় পরে কলকাতায় চলে আসেন, কিন্তু ১৯৩০ সালের ২৫ জানুয়ারি মুকুল সেন, সচীন কর গুপ্তসহ আরও কয়েকজন গ্রেফতার হন। জেলখানায় প্রচন্ড দৈহিক পীড়ন তাকে সহ্য করতে হয়েছে। একদিকে জেলের বাহিরে চলতে থাকে বিপ্লবীদের চাঞ্চল্যকর অভিযান আর অন্যদিকে জেলের ভিতরে শুরু হয় বিপ্লবী বন্দিদের আত্মবিশ্লেষণ। জেলে আসবার আগেই মুকুল সেনের চিন্তা জগতে কিছু প্রশ্ন, কিছু পরিবর্তনের ঢেউ লাগতে শুরু করে।
জেলে আসার পূর্বেই বই পড়ে তিনি সমাজতন্ত্র শব্দটির সাথে পরিচিত হন। সমাজতন্ত্রের তাৎপর্য তাঁর মনে গভীর রেখাপাত করলেও স্বাধীনতার লড়াই প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য বলে তিনি মনে করতেন। এ সকল বইপত্র প্রথম পর্যায়ের পাঠে তিনি অনেকটাই বুঝতে পারেননি। তবে ক্রমে ক্রমে এই পাঠ মুকুল সেনকে মার্কসবাদী শিক্ষা ও আদর্শে অনুপ্রাণিত করে এবং ১৯৩১ এর শেষ দিকে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে তিনি নিজেকে কমিউনিস্ট বলে ঘোষণা করেন।
জেলখানার নির্যাতন, কষ্ট ও লাঞ্ছলা তাঁর সহনশীলতাকে বাড়িয়ে দিত বলে তিনি মনে করতেন। সমাজের শোষিত, বঞ্চিত, গৃহহীন, কপর্দকশূন্য মানুষের দুঃখ-কষ্টের প্রতিকার না করতে পারার এক অসহ্য যন্ত্রণায় দগ্ধ হতেন। ১৯৩২ সালে মুকুল সেন, গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল, অনন্ত সিংহ, রমেশ চ্যাটার্জি সহ ২৩ জন বিপ্লবী বন্দিকে যাবতজীবন কারাদন্ড দিয়ে আন্দামানে নির্বাসনে পাঠানো হয়। ১৯৩৪ সালে আন্দামান থেকে ছয় মাসের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বাংলার জেলে ফিরে। এ সময়ই শেষ হয় মুকুল সেনের সশস্ত্র বিপ্লবী জীবন, শুরু হয় আরেক নতুন অধ্যায়, কমিউনিস্ট মুকুল সেনের অধ্যায়। তখন যক্ষা রোগে আক্রান্ত প্রচন্ড অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি বরিশালে পার্টি গড়ে তোলার কাজে হাত দেন। পুরনো বন্ধু-বান্ধব ও নতুন কিছু সংখ্যক কর্মী সংগ্রহ করে তাদেরকে মার্কসবাদ ও মার্কসবাদী বই-পুস্তক পড়াতেন। তরুন-তরুনীদের গ্রুপ গঠন করে পাঠচক্রে বসতেন, দিনের পর দিন তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে কর্মীদের মার্কসবাদ বোঝাতেন। এভাবে দীর্ঘ পাঁচ মাস একটানা কাজ করে ১৯৩৪ সালের ০৭ নভেম্বর ১০ জন সদস্য নিয়ে বরিশালে প্রথম কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। সদস্যরা হলেন, নির্মল দাস গুপ্ত, সুশীল দাস গুপ্ত, প্রেমাংশু দাস গুপ্ত, অমীয় দাস গুপ্ত ও মুকুল সেন প্রমুখ। তখন কমিউনিস্ট পার্টি অবৈধ থাকায় সেস্যালিস্ট লীগ নামে পার্টির প্রথম সভাতেই স্ফূলিঙ্গ নামে একটি মাসিক পত্রিকা বের করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যেটি পার্টি সদস্যদের আত্মশিক্ষার বাহন ছিল।
এ সময়ই মুকুল সেন পার্টির তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দলিলপত্র সংগ্রহ করে পার্টি কমরেডদের নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। পার্টি আত্মপ্রকাশের পর সর্বভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যোগাযোগ করে ১৯৩৬ সালে নিত্যানন্দ চৌধুরীর উপস্থিতিতে তৃতীয় আন্তর্জাতিক অনুমোদিত কমিউনিস্ট পার্টির শাখা রূপে বরিশাল জেলা কমিউনিস্ট পার্টি আত্মপ্রকাশ করে। জ্যোতিদাস গুপ্ত এই কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন। মুকুল সেন প্যারোলে থাকায় এই কমিটিতে তাকে যুক্ত রাখা সম্ভব হয়নি। তবে পার্টির সকল কাজ তারই যুক্তি পরামর্শে পরিচালিত হতো। ১৯৩৭-৩৯’র মধ্যে আন্দামান বন্দিরা মুক্তি পেতে থাকেন। তাঁরা আন্দামান জেলখানায় বন্দি থাকাকালীন কমিউনিস্ট মতাদর্শ গ্রহণ করেন। বরিশালের বিপ্লবীরা মুক্তি পাবার পর তারা মুকুল সেনের নেতৃত্বে পার্টিতে যুক্ত হন। ১৯৩৬ খ্রি. থেকেই পার্টি গঠনের পর পরই মুকুল সেন কৃষক-ছাত্র ও মহিলা সংগঠন গড়ে তোলার দিকে নজর দেন। নিজ গ্রাম গৈলাতে কৃষক সংগঠন গড়ে তোলেন। বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক সংগঠন ও আন্দোলন ছড়িয়ে দেন।
১৯৩৬ সালে মুকুল সেনের তদারকিতে পার্টি ছাত্রদের মধ্যে একটি বলয় সৃষ্টি করেন। ১৯৩৭ সালে কলেজ ছাত্র রফিকুল ইসলাম, মন্টু দাশ গুপ্ত, বেলা গুপ্ত ও সন্তোষ বসুর নেতৃত্বে ছাত্র সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্র ফেডারেশন গঠিত হয়। এ বছরই মনোরমা বসু, সরযু সেনের নেতৃত্বে মহিলা পরিষদ গঠন করে বরিশালে নারী আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৩৮ সালে আন্দামান থেকে সম্পূর্ণ রূপে মুক্তিলাভ করে ১৯৩৯ খ্রি: থেকে মুকুল সেন নিজেকে পার্টির সার্বক্ষণিক হিসেবে নিযুক্ত করেন। তিনি বারবারই পার্টি কর্মীদের পড়াশুনার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে মার্কসবাদ সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলতেন। যাতে কর্মীরা গণমানুষের মধ্যে গণআন্দোলন তৈরি করতে পারে এবং এই গণআন্দোলনই যাতে কর্মীদের পার্টি কর্মী হিসেবে মার্কসবাদী করে গড়ে তুলতে পারে। এভাবে মুকুল সেন ও অন্যান্য কমিউনিস্ট নেতৃত্বের অক্লান্ত কাজের ফলে বরিশালে পার্টি বড় হতে থাকে ১৯৩৯-৪১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বরিশাল কৃষক সমিতির বেশ কয়েকটি বড় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৯৪৩ সালে বাংলায় শুরু হয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। যে দুর্ভিক্ষে অগণিত মানুষ ক্ষুধার তাড়নায় ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। কাঁক ও কুকুরের সঙ্গে বুভুক্ষু মানুষ অখাদ্য কুখাদ্য খুঁজে ফিরছে ডাস্টবিনে, নর্দমায়। এই দুর্ভিক্ষ থেকে মানুষকে বাঁচাতে কমরেড মুকুল সেন, নীরেন ঘোষ, মনোরমা বসু, মনি কুন্তলা সেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সমস্ত বরিশালে ৪০/৪৫টি লঙ্গরখানা চালু করে অমানুষিক পরিশ্রম করে ক্ষুধার্থ মানুষের পাশে দাঁড়ান। মনোরমা বসুর নেতৃত্বে মহিলা আত্মরক্ষা কমিটি সেই মন্মন্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই দুর্ভিক্ষে সমগ্র বাংলায় ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
১৯৪৫ সালে ভূমি সংস্কারের প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে বরিশালের সাতলা-বাগদায় বাঁধ রক্ষার জন্য নতুন করে কৃষক আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই আন্দোলনের ফলেই বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলে বাঁধ ও স্লুইচ গেট নির্মাণ হয়। এই আন্দোলনের মূল নেতা ছিলেন মুকুল সেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে বরিশাল জেলা পার্টির দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে অমিয় দাশ গুপ্তকে সম্পাদক ও মুকুল সেনকে সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য করা হয়। মুকুল সেনকে প্রাদেশিক সম্মেলন ও পার্টি কংগ্রেসের বরিশাল জেলা প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়। ১৯৪৮ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় কংগ্রেসে বরিশালের প্রতিনিধি ছিলেন মুকুল সেন এই কংগ্রেসে মুকুল সেন পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫০ সালে দাঙ্গা বিরোধী সংগ্রামে বরিশালের নেতৃত্ব দেন মুকুল সেন। বরিশালের প্রায় সকল কমিউনিস্ট নেতা এ সময়ে গ্রেফতার হলেও মুকুল সেন এবং জগদীশ আইচকে পুলিশ গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয় কিন্তু ১৯৫১ সালে মুকুল সেন গ্রেফতার হন। প্রথমে বরিশাল জেলে, পরে তাঁকে ঢাকার জেলে নিয়ে আসে। তখন জেলে বসে তিনি কমিউনিস্ট মতাদর্শ বিস্তারে ও পার্টির সভ্য করার কাজে ব্যস্ত থাকেন। ১৯৫৬ সালে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পার্টির কাজে যুক্ত হয়ে কৃষক সমিতিকে সংগঠিত করার কাজে যুক্ত হন।
১৯৫৬-৬৯’র গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত তিনি বৃহত্তর বরিশালে কমিউনিস্ট পার্টি এবং মেহনতি মানুষের আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এ কাজে তাঁকে খোকা রায়, নলিনী দাস, নুরুল ইসলাম মুন্সিসহ অনেকে সহযোগিতা করেন।