ঢাকা ০২:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাজবাড়ী জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড আরমান আলীর মৃত্যুতে ওয়ার্কার্স পার্টির শোক বীরমুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বাবুর মৃত্যুতে ওয়ার্কার্স পার্টির শোক বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি পার্বত্য চুক্তি বাতিলের কথা ইতিহাস মুছে ফেলার আয়োজন। রাজনীতির নতুন মুখোশ, বামপন্থার বিভ্রান্তি ও ভবিষ্যতের সন্ধান চাঁদপুরে সিনিয়র যুব রেড ক্রিসেন্ট ফোরামের নতুন কমিটি গঠন কাবুলে আসন্ন পানি সংকট গোপালগঞ্জে জনতার ওপর গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে পুরান ঢাকায় বিএনপির বিক্ষোভ আবুল বারাকত এতদিন বাইরে ছিলেন সেটাই অনেক!

আবুল বারাকত এতদিন বাইরে ছিলেন সেটাই অনেক!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৫০:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

আবুল বারাকত এতদিন বাইরে ছিলেন সেটাই অনেকআবুল বারাকত এতদিন বাইরে ছিলেন সেটাই অনেক!

অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকত অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তিনি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রচলিত পাঠ্য ও নোটবই টাইপের কিছু না লিখে- তিনি সংখ্যালঘু হিন্দুদের সম্পত্তি ও তাদের জনমিতি, জঙ্গীবাদ-মৌলবাদের অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে কাজ করেছেন, তিনি স্বাধীনতার পর ৫০ বছরের উন্নয়ন তহবিলের লুটপাটের কাহিনী তুলে ধরেছেন। এই কাজের পর মৌলবাদবান্ধব সরকার তাঁকে এতদিন বাইরে রেখেছিল সেটাই তো অনেক?

আবুল বারাকাত তাঁর;
১। সম্প্রদায়ের বঞ্চনা: অর্পিত সম্পত্তির সাথে বসবাস” পুস্তকে দেখিয়েছেন, কিভাবে শত্রু সম্পত্তি আইন অর্পিত সম্পত্তি নাম ধারণ করে হাজার হাজার একর হিন্দু সম্পত্তি দখল হয়ে গেছে। তিনি তার ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক গবেষণায় দেখিয়েছেন পাঁচদশকে (১৯৬৪-২০১৩) ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬১২ জন হিন্দু দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দু’তিন দশক পরে এদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী খুঁজে পাওয়া যাবে না।

২। তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশ এখন জঙ্গিবাদের তীর্থ ভূমিতে রুপান্তরিত হচ্ছে। এই গবেষণায় তিনি করেছেন, বাংলাদেশে মৌলবাদের অর্থনীতির বার্ষিক নীট মুনাফা ২,০০০ কোটি টাকা (২৫০ মিলিয়ন ডলার)! এবং বিগত ৩৫ বছরে (১৯৭৫-২০১০) মৌলবাসাম্দেপ্র অর্থনীতি সৃষ্ট ক্রম পুঞ্জিভূত নীট মুনাফার মোট পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৫০,০০০ কোটি টাকা! পাশাপাশি, বিকাশ-বিস্তৃতির সম্ভাবনা হিসেবে দেখা যায়- মৌলবাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার (বার্ষিক গড় ৭.৫% থেকে ৯) মূল স্রোতের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার (বার্ষিক গড় ৫% – ৬%) এর কত শতাংশ সত্য সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কি সেদিকে ধাবিত হচ্ছে না?

৩। তিনি তাঁর সর্বাধিক আলোচিত গবেষণায় দেখিয়েছে যে, ”৫০ বছরে” (১৯৭২-৭৩-২০২২-২৩) দেশ পূর্ণগঠন ও উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক সাহায্যের মাত্র ২৫ ভাগ ব্যবহৃত হয়েছে, বাকি ৭৫ শতাংশ লুটপাট হয়েছে! যার পরিমান ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা! কোন এক সরকারের আমলে সেটা না হলেও সেই লুটপাট চলছে ধারাবাহিক ভাবে! তাতে কোন দলের না মাথা খারাপ হবে?

আবুল বারাকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রগতিশীল ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে মৌলবাদের হুমকি ক্রোধ ক্ষোভ পূর্বে থেকেই ছিল। এখন তাদের প্রতিশোধের পালা।

তাঁকে নিজ বাসা থেকে কোন ওয়ারেন্ট, কাগজপত্র, মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি যদি বড় অপরধীই হবে তাহলে বাসায় ছিলেন কেন? তিনি তো আত্মগোপন করতে পারতেন, তা করেননি। তাহলে?

তার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ থাকতে পারে?
এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের নামে মামলা করেছ দুদক। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এই টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। ভাল কথা যাদের এই ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে তাদের কি গ্রেফতার করা হয়েছে? বাকি ২২জন কোথায়? কেন শুধু তিনি?

হাজার হাজার কোটি যারা পাচার করেছেন, ব্যাংকগুলোকে পথে বসিয়েছেন, সেই সব বিগ জায়ান্ট সামিট গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, হাসেম গ্রুপ কয়জনের নাম বলবো তাদের কোমড়ে কি দড়ি পরানো হয়েছে? তাহলে কি হলো, ঠ্যাং থুয়ে লাটি নিয়ে টানাটানি চলছে নয় কি?

বারাকাত স্যার একজন আপদমন্তক শিক্ষক ছিলেন কিন্তু তিনি কোন চক্রে পড়ে/লোভে ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন তা আমার বোধগম্য নয়। দুদক যদি সততা নিয়ে তদন্ত করে সেটা নিশ্চয়ই বের হয়ে আসবে এই অনিয়মে অর্থ তাঁর কোন হিসেবে গেছে কি’না? কিন্তু যাঁরা তদন্ত ও বিচার করবে তারা কি নিরপেক্ষ? তাদের কাছে ন্যায়বিচার আশা করা যায়? তারা তাদের সেই বিশ্বাস ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক আগেই হারিয়েছে। তার কি কোন প্রমাণ লাগবে?

আমি গতবছর বাংলাদেশে থাকাকালীয় আমার গবেষণা কাজে – উনার সাথে আমি একাধিকার যোগাযোগ করেছি। উনার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তিনিও অর্থনীতিবিদ, আওয়ামী ঘরনার কেউ নন। তিনি আমার এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বারাকাত এ কাজ করেনি, অর্থ আত্মসাৎ করেনি, তাকে ব্যবহার করেছে আওয়ামী দৃবৃত্তরা। কিন্তু প্রশ্ন তিনি ব্যবহৃত হলেন কেন? তিনি কি তখন বিবৃতি দিয়ে, সংবাদ সম্মেলন করে সে কথা বলতে পারতেন না?

আবুল বারাকত’রা একটি উন্নয়ন দর্শণ হাজির করেছিলন। উনাদের বক্তব্য ছিল, সীমিত গণতন্ত্র অধিক উন্নয়ন। চীনসহ বিশ্বের অনেক দেশেই সে তত্ত্ব অনুসরণ করে। তাঁদর বক্তব্য ছিল যে, গণতন্ত্রের জন্য সবসময় ভাল নির্বাচন না হলেও চলে। আমি তাদের ভাবনাকে সমর্থন করি না কিন্তু তাই বলে কি তাঁকে গণদুষমন বলতে হবে? এ দেশে যারা শরিয়া আইন চায়, তালেবানী শাসন চায়, নারীদের ব্যাশ্যা বলে তাদের কি বলবেন?

আবুল বারাকতরা আওয়ামী বুদ্ধিজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। সে কারণে তিনি তাঁর সন্মান, মর্যাদা হারিয়েছে। দূর্নীতির অংশীদার হয়েছেন, অনেক অপমানিতও হয়েছেন। এই কাজ শুধু আওয়ামী লীগের সময়ই ঘটেনি সব শাসকের সময়ই হয়েছে। এখন যেমন ড. ইউনূসকে ঘিরে তৈরী হয়েছে তেমনি বিএনপি ক্ষমতায় না যেতেই মহাসমারহে এক শ্রেণী তৈরী হয়ে গেছে। কি বলবেন তাঁদের?

আবুল বারকাত নিপাট ভদ্রলোক, শিক্ষক ও একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। তিনি বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক কাজ করেছেন। তিনি সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতির যে বিপদজনক তথ্য হাজির করেছেন, সেই সাহস অনেক অর্থনীতিকেরও নেই। তাঁর বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে তা আদালতে প্রমান হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বারাকাতকে মুক্তি দিন।

ট্যাগস :

রাজবাড়ী জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড আরমান আলীর মৃত্যুতে ওয়ার্কার্স পার্টির শোক

আবুল বারাকত এতদিন বাইরে ছিলেন সেটাই অনেক!

আপডেট সময় ০৮:৫০:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

আবুল বারাকত এতদিন বাইরে ছিলেন সেটাই অনেকআবুল বারাকত এতদিন বাইরে ছিলেন সেটাই অনেক!

অর্থনীতিবিদ আবুল বারাকত অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তিনি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রচলিত পাঠ্য ও নোটবই টাইপের কিছু না লিখে- তিনি সংখ্যালঘু হিন্দুদের সম্পত্তি ও তাদের জনমিতি, জঙ্গীবাদ-মৌলবাদের অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে কাজ করেছেন, তিনি স্বাধীনতার পর ৫০ বছরের উন্নয়ন তহবিলের লুটপাটের কাহিনী তুলে ধরেছেন। এই কাজের পর মৌলবাদবান্ধব সরকার তাঁকে এতদিন বাইরে রেখেছিল সেটাই তো অনেক?

আবুল বারাকাত তাঁর;
১। সম্প্রদায়ের বঞ্চনা: অর্পিত সম্পত্তির সাথে বসবাস” পুস্তকে দেখিয়েছেন, কিভাবে শত্রু সম্পত্তি আইন অর্পিত সম্পত্তি নাম ধারণ করে হাজার হাজার একর হিন্দু সম্পত্তি দখল হয়ে গেছে। তিনি তার ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক গবেষণায় দেখিয়েছেন পাঁচদশকে (১৯৬৪-২০১৩) ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬১২ জন হিন্দু দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দু’তিন দশক পরে এদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী খুঁজে পাওয়া যাবে না।

২। তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশ এখন জঙ্গিবাদের তীর্থ ভূমিতে রুপান্তরিত হচ্ছে। এই গবেষণায় তিনি করেছেন, বাংলাদেশে মৌলবাদের অর্থনীতির বার্ষিক নীট মুনাফা ২,০০০ কোটি টাকা (২৫০ মিলিয়ন ডলার)! এবং বিগত ৩৫ বছরে (১৯৭৫-২০১০) মৌলবাসাম্দেপ্র অর্থনীতি সৃষ্ট ক্রম পুঞ্জিভূত নীট মুনাফার মোট পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৫০,০০০ কোটি টাকা! পাশাপাশি, বিকাশ-বিস্তৃতির সম্ভাবনা হিসেবে দেখা যায়- মৌলবাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার (বার্ষিক গড় ৭.৫% থেকে ৯) মূল স্রোতের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার (বার্ষিক গড় ৫% – ৬%) এর কত শতাংশ সত্য সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কি সেদিকে ধাবিত হচ্ছে না?

৩। তিনি তাঁর সর্বাধিক আলোচিত গবেষণায় দেখিয়েছে যে, ”৫০ বছরে” (১৯৭২-৭৩-২০২২-২৩) দেশ পূর্ণগঠন ও উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক সাহায্যের মাত্র ২৫ ভাগ ব্যবহৃত হয়েছে, বাকি ৭৫ শতাংশ লুটপাট হয়েছে! যার পরিমান ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা! কোন এক সরকারের আমলে সেটা না হলেও সেই লুটপাট চলছে ধারাবাহিক ভাবে! তাতে কোন দলের না মাথা খারাপ হবে?

আবুল বারাকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রগতিশীল ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে মৌলবাদের হুমকি ক্রোধ ক্ষোভ পূর্বে থেকেই ছিল। এখন তাদের প্রতিশোধের পালা।

তাঁকে নিজ বাসা থেকে কোন ওয়ারেন্ট, কাগজপত্র, মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি যদি বড় অপরধীই হবে তাহলে বাসায় ছিলেন কেন? তিনি তো আত্মগোপন করতে পারতেন, তা করেননি। তাহলে?

তার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ থাকতে পারে?
এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের নামে মামলা করেছ দুদক। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এই টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। ভাল কথা যাদের এই ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে তাদের কি গ্রেফতার করা হয়েছে? বাকি ২২জন কোথায়? কেন শুধু তিনি?

হাজার হাজার কোটি যারা পাচার করেছেন, ব্যাংকগুলোকে পথে বসিয়েছেন, সেই সব বিগ জায়ান্ট সামিট গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, হাসেম গ্রুপ কয়জনের নাম বলবো তাদের কোমড়ে কি দড়ি পরানো হয়েছে? তাহলে কি হলো, ঠ্যাং থুয়ে লাটি নিয়ে টানাটানি চলছে নয় কি?

বারাকাত স্যার একজন আপদমন্তক শিক্ষক ছিলেন কিন্তু তিনি কোন চক্রে পড়ে/লোভে ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন তা আমার বোধগম্য নয়। দুদক যদি সততা নিয়ে তদন্ত করে সেটা নিশ্চয়ই বের হয়ে আসবে এই অনিয়মে অর্থ তাঁর কোন হিসেবে গেছে কি’না? কিন্তু যাঁরা তদন্ত ও বিচার করবে তারা কি নিরপেক্ষ? তাদের কাছে ন্যায়বিচার আশা করা যায়? তারা তাদের সেই বিশ্বাস ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক আগেই হারিয়েছে। তার কি কোন প্রমাণ লাগবে?

আমি গতবছর বাংলাদেশে থাকাকালীয় আমার গবেষণা কাজে – উনার সাথে আমি একাধিকার যোগাযোগ করেছি। উনার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু তিনিও অর্থনীতিবিদ, আওয়ামী ঘরনার কেউ নন। তিনি আমার এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বারাকাত এ কাজ করেনি, অর্থ আত্মসাৎ করেনি, তাকে ব্যবহার করেছে আওয়ামী দৃবৃত্তরা। কিন্তু প্রশ্ন তিনি ব্যবহৃত হলেন কেন? তিনি কি তখন বিবৃতি দিয়ে, সংবাদ সম্মেলন করে সে কথা বলতে পারতেন না?

আবুল বারাকত’রা একটি উন্নয়ন দর্শণ হাজির করেছিলন। উনাদের বক্তব্য ছিল, সীমিত গণতন্ত্র অধিক উন্নয়ন। চীনসহ বিশ্বের অনেক দেশেই সে তত্ত্ব অনুসরণ করে। তাঁদর বক্তব্য ছিল যে, গণতন্ত্রের জন্য সবসময় ভাল নির্বাচন না হলেও চলে। আমি তাদের ভাবনাকে সমর্থন করি না কিন্তু তাই বলে কি তাঁকে গণদুষমন বলতে হবে? এ দেশে যারা শরিয়া আইন চায়, তালেবানী শাসন চায়, নারীদের ব্যাশ্যা বলে তাদের কি বলবেন?

আবুল বারাকতরা আওয়ামী বুদ্ধিজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। সে কারণে তিনি তাঁর সন্মান, মর্যাদা হারিয়েছে। দূর্নীতির অংশীদার হয়েছেন, অনেক অপমানিতও হয়েছেন। এই কাজ শুধু আওয়ামী লীগের সময়ই ঘটেনি সব শাসকের সময়ই হয়েছে। এখন যেমন ড. ইউনূসকে ঘিরে তৈরী হয়েছে তেমনি বিএনপি ক্ষমতায় না যেতেই মহাসমারহে এক শ্রেণী তৈরী হয়ে গেছে। কি বলবেন তাঁদের?

আবুল বারকাত নিপাট ভদ্রলোক, শিক্ষক ও একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। তিনি বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক কাজ করেছেন। তিনি সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতির যে বিপদজনক তথ্য হাজির করেছেন, সেই সাহস অনেক অর্থনীতিকেরও নেই। তাঁর বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে তা আদালতে প্রমান হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বারাকাতকে মুক্তি দিন।