ঢাকা ০৩:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাজেটে নেই নির্বাচনী বরাদ্দ, এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলল ওয়ার্কার্স পার্টি

ডিসেম্বরে ভোট না হলে গণআন্দোলনের হুঁশিয়ারি

২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এই ঘোষণাকে ‘অঘোষিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অংশ’ বলে কড়া সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি।

সোমবার এক বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো দাবি করে, এই নির্বাচন-পেছানোর পরিকল্পনা জনগণের অভিপ্রায় ও দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপন্থী। বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে দেশের প্রায় সব পক্ষই ২০২৫ সালের ডিসেম্বরকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপযুক্ত সময় হিসেবে উল্লেখ করেছিল। অথচ তা উপেক্ষা করে আগামী বছরের এপ্রিল মাসে ভোট করার সিদ্ধান্ত মূলত ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার এক কৌশল।

ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশজুড়ে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, মব জাস্টিস, নারী নির্যাতন, মৌলবাদী হামলা, প্রশাসনে দলীয় হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক মন্দা, কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া, এবং সার্বিক সামাজিক অনিশ্চয়তা — সবকিছু মিলে দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। এই প্রেক্ষাপটে একটি অবাধ ও সময়োপযোগী নির্বাচন ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।

অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রাম বন্দর ও মানবিক করিডোরের নামে বিদেশি স্বার্থ রক্ষায় বেশি আগ্রহী – এমন অভিযোগ তুলে ওয়ার্কার্স পার্টি জানায়, সরকার ‘একরোখা ও ফ্যাসিবাদী আচরণ’ করে চলেছে। এই ধারা বজায় থাকলে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে তারা।

২০২৬ সালের এপ্রিলকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ‘অযৌক্তিক সময়’ বলে উল্লেখ করেছে দলটি। তারা যুক্তি দেয়, ঐ সময় কৃষিকাজ, শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষা ও গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার জন্য নির্বাচন পরিচালনায় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। দেশের ইতিহাসে কখনোই এপ্রিল মাসে জাতীয় নির্বাচন হয়নি।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে দলটি প্রশ্ন তুলেছে, সদ্য ঘোষিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কোনও ধরনের নির্বাচনী বরাদ্দ রাখা হয়নি। বাজেটে ভোট সংক্রান্ত ব্যয় না থাকায় স্পষ্ট হচ্ছে, নির্বাচন পরিচালনার জন্য সরকারের কোনও কার্যকর পরিকল্পনা নেই।

ওয়ার্কার্স পার্টির প্রশ্ন, “যদি বাজেটে ভোটের জন্য কোন অর্থই না থাকে, তবে নির্বাচন কীভাবে ও কেন অনুষ্ঠিত হবে? এটি কি শুধুই একটি তারিখ দিয়ে জনসন্তোষ রক্ষা করার প্রচেষ্টা, নাকি ক্ষমতা ধরে রাখার ছলনা?”

বিবৃতির শেষে দলটি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন না করা হলে, জনগণ রাস্তায় নেমে গণআন্দোলন গড়ে তুলবে। জাতির ৫৪ বছরের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা রক্ষায় এটাই একমাত্র পথ।

দলটির মতে, জাতীয় স্বার্থে ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে, অবিলম্বে ডিসেম্বরেই নির্বাচন ঘোষণা করে ড. ইউনূসের সরকারের দায়িত্বভার শেষ করা উচিত। অন্যথায় এর দায় বর্তাবে সরকারের ওপরই।

নতুনকথা/এএস

ট্যাগস :

বাজেটে নেই নির্বাচনী বরাদ্দ, এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলল ওয়ার্কার্স পার্টি

আপডেট সময় ১২:১৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

ডিসেম্বরে ভোট না হলে গণআন্দোলনের হুঁশিয়ারি

২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এই ঘোষণাকে ‘অঘোষিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অংশ’ বলে কড়া সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি।

সোমবার এক বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো দাবি করে, এই নির্বাচন-পেছানোর পরিকল্পনা জনগণের অভিপ্রায় ও দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপন্থী। বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে দেশের প্রায় সব পক্ষই ২০২৫ সালের ডিসেম্বরকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপযুক্ত সময় হিসেবে উল্লেখ করেছিল। অথচ তা উপেক্ষা করে আগামী বছরের এপ্রিল মাসে ভোট করার সিদ্ধান্ত মূলত ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার এক কৌশল।

ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশজুড়ে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, মব জাস্টিস, নারী নির্যাতন, মৌলবাদী হামলা, প্রশাসনে দলীয় হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক মন্দা, কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া, এবং সার্বিক সামাজিক অনিশ্চয়তা — সবকিছু মিলে দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। এই প্রেক্ষাপটে একটি অবাধ ও সময়োপযোগী নির্বাচন ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।

অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রাম বন্দর ও মানবিক করিডোরের নামে বিদেশি স্বার্থ রক্ষায় বেশি আগ্রহী – এমন অভিযোগ তুলে ওয়ার্কার্স পার্টি জানায়, সরকার ‘একরোখা ও ফ্যাসিবাদী আচরণ’ করে চলেছে। এই ধারা বজায় থাকলে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও সতর্ক করেছে তারা।

২০২৬ সালের এপ্রিলকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ‘অযৌক্তিক সময়’ বলে উল্লেখ করেছে দলটি। তারা যুক্তি দেয়, ঐ সময় কৃষিকাজ, শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষা ও গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার জন্য নির্বাচন পরিচালনায় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। দেশের ইতিহাসে কখনোই এপ্রিল মাসে জাতীয় নির্বাচন হয়নি।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে দলটি প্রশ্ন তুলেছে, সদ্য ঘোষিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কোনও ধরনের নির্বাচনী বরাদ্দ রাখা হয়নি। বাজেটে ভোট সংক্রান্ত ব্যয় না থাকায় স্পষ্ট হচ্ছে, নির্বাচন পরিচালনার জন্য সরকারের কোনও কার্যকর পরিকল্পনা নেই।

ওয়ার্কার্স পার্টির প্রশ্ন, “যদি বাজেটে ভোটের জন্য কোন অর্থই না থাকে, তবে নির্বাচন কীভাবে ও কেন অনুষ্ঠিত হবে? এটি কি শুধুই একটি তারিখ দিয়ে জনসন্তোষ রক্ষা করার প্রচেষ্টা, নাকি ক্ষমতা ধরে রাখার ছলনা?”

বিবৃতির শেষে দলটি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন না করা হলে, জনগণ রাস্তায় নেমে গণআন্দোলন গড়ে তুলবে। জাতির ৫৪ বছরের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা রক্ষায় এটাই একমাত্র পথ।

দলটির মতে, জাতীয় স্বার্থে ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে, অবিলম্বে ডিসেম্বরেই নির্বাচন ঘোষণা করে ড. ইউনূসের সরকারের দায়িত্বভার শেষ করা উচিত। অন্যথায় এর দায় বর্তাবে সরকারের ওপরই।

নতুনকথা/এএস