সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এক রাতেই ৭০ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বুধবার গভীর রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) জানিয়েছে, এসব ব্যক্তিকে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি, মিনাটিলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কালাইরাগ সীমান্ত দিয়ে ৫৩ জন এবং সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে ১৭ জনকে পুশইন করা হয়।
আটকদের মধ্যে ২২ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী এবং ৩০ জন শিশু রয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলার ৪৩ জন এবং লালমনিরহাট জেলার ২৭ জন বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
জৈন্তাপুরের শ্রীপুর বিওপি: ২টি পরিবারের মোট ১৭ জন।
- পুরুষ: ৪ জন
- নারী: ৪ জন
- শিশু: ৯ জন
জেলা: কুড়িগ্রাম (৭ জন), লালমনিরহাট (১০ জন)
মিনাটিলা বিওপি: ৪টি পরিবারের ২৩ জন।
- পুরুষ: ৯ জন
- নারী: ৭ জন
- শিশু: ৭ জন
জেলা: সবাই কুড়িগ্রাম
কালাইরাগ বিওপি (কোম্পানীগঞ্জ): ২টি পরিবারের ১৩ জন।
- পুরুষ: ৪ জন
- নারী: ৩ জন
- শিশু: ৬ জন
জেলা: সবাই কুড়িগ্রাম
ছাতক উপজেলার নোয়াকোট সীমান্ত (সুনামগঞ্জ): মোট ১৭ জন।
- পুরুষ: ৫ জন
- নারী: ৪ জন
- শিশু: ৮ জন
জেলা: সবাই লালমনিরহাট
৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক জানান, “পুশইন হওয়া এসব ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং সেখানে দীর্ঘদিন বসবাস করছিলেন। বিএসএফ কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই তাদের রাতের আঁধারে সীমান্তে ফেলে রেখে যায়।”
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির জানান, “বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত সীমান্তের নোয়াকোট এলাকা দিয়ে ১৭ জনকে পুশইন করা হয়। বিজিবি তাদের আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছে।”
এর আগে গত ২৮ মে একই সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে পুশইন করেছিল বিএসএফ। সীমান্তে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসারে পুশইন করা বেআইনি এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও তা অগ্রহণযোগ্য।
সম্প্রতি সীমান্তে পুশইনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও মানবিক দায়বদ্ধতা উভয় ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা ও সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
নতুনকথা/এএস